Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২২nd এপ্রিল ২০২৫

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট

১৯৭২ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশ সরকার এবং কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগীতায় বিশিষ্ট সমাজসেবক ও জন হিতৈষী অধ্যাপক ডাঃ তোফায়েল আহমেদ শিশুদের জন্য দেশের প্রথম হাসপাতাল “ঢাকা শিশু হাসপাতাল” প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠালগ্নে ধানমন্ডির একটি ভাড়া করা বাড়ীতে হাসপাতালটির ৫০ শয্যা বিশিষ্ট আন্তঃবিভাগ এবং শুক্রাবাদ এলাকায় তাবু খাটিয়ে বর্হিবিভাগের কার্যক্রম চালু করা হয়। শুরুতে সেভ দ্যা চিলড্রেন ইউকে এবং পরবর্তীতে ওয়াল্ড ভিশন বাংলাদেশ হাসপাতালের কার্যক্রম চালিয়ে নিতে নিয়মিতভাবে অর্থ সহায়তা প্রদান করে।

 

বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) ডিসেম্বর ১৯৭৪ সালে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করণের সুযোগ রেখে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট একটি শিশু হাসপাতাল নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদন করেন। মার্চ, ১৯৭৫ এ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শেরে বাংলা নগরের বর্তমান স্থানে ঢাকা শিশু হাসপাতালের জন্য জমি বরাদ্দ দেয়। মন্ত্রণালয় তদসঙ্গে হাসপাতালের নির্মাণ কাজ তদারকি করার জন্য একটি কমিটি তৈরী করে। ঢাকা শিশু হাসপাতালের  প্রতিষ্ঠাতা  এবং পরিচালনা  বোর্ডের  সদস্য সচিব  অধ্যাপক ডাঃ তোফায়েল আহমেদ ঐ কমিটির একজন সদস্য ছিলেন। সরকারি বরাদ্দ এবং বিভিন্ন দান, ২টি পাবলিক লটারি ও কনসার্ট আয়োজনের মাধ্যমে সংগৃহীত ‘‘ঢাকা শিশু হাসপাতাল ট্রাষ্ট ফান্ড” তহবিল থেকে এই হাসপাতালের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। ১৯৭৭ সালের জুন মাসে ঢাকা শিশু হাসপাতাল এই নতুন ভবনে তার সেবা কার্যক্রম শুরু করে।

 

শিশু স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর জন্য ঢাকা শিশু হসপাতাল ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (বাশিস্বাই) প্রতিষ্ঠা করে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বাশিস্বাই বিসিপিএস এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ শিশু স্বাস্থ্য বিষয়ক স্নাতকোত্তর কোর্স  যেমন: শিশু মেডিসিন বিষয়ে এফসিপিএস, এমডি ও ডিপ্লোমা এবং শিশু সার্জারী বিষয়ে এম এস কোর্স পরিচালনা করে আসছে। বাশিস্বাই পরবর্তীতে নিওনেটোলজি, পেডিয়েট্রিক নেফ্রলজি, পেডিয়েট্রিক কার্ডিওলজি, পেডিয়েট্রিক পালমোনোলজি এবং পেডিয়েট্রিক হেমাটো-অনকোলজি এর এফসিপিএস কোর্সসমূহ চালু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাশিস্বাই উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত একটি ইনস্টিটিউট। বাশিস্বাই বিএসএমএমইউ এর পূর্ববর্তী সকল কোর্সের পাশাপাশি ২০১৪ থেকে জেনারেল পেডিয়েট্রিকস, নিওনেটোলজি, পেডিয়েট্রিক নেফ্রলজি এবং পেডিয়েট্রিক সার্জারী বিষয়ে এমডি ও এমএস রেসিডেন্সি কোর্স পরিচালনা করে আসছে। শিশু স্বাস্থ্য বিষয়ক কোর্সের পাশাপাশি বাশিস্বাই ২০০৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ০৪ বছর মেয়াদী বিএসসি ইন হেলথ টেকনোলজি (ল্যাবরেটরি) স্নাতক কোর্স চালু করে। অত্যন্ত সাফল্যের সাথে এই কোর্সের কার্যক্রম চলছে। অত্র ইনস্টিটিউট ২০১১ সালে বাংলাদেশ নার্সিং এন্ড মিডওয়াফারী কাউন্সিলের অধীনে ০১ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা ইন পেডিয়াট্রিক নাসিং কোর্স চালু করে এবং তা অদ্যাবধি নিয়মিত চলছে। ঢাশিহা ২০১৮ সালে নার্সিং শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে “ঢাকা শিশু হাসপাতাল নার্সিং ইনস্টিটিউট” প্রতিষ্ঠা করে।

 

প্রতিষ্ঠার পর থেকে ঢাকা শিশু হাসপাতাল একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হয়ে এসেছে। ১৯৭৫ সালে তদানিন্তন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় হাসপাতালটি পরিচালনার লক্ষ্যে সরকারি গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঢাকা শিশু হাসপাতাল (ঢাশিহা) এর প্রথম পরিচালনা বোর্ড গঠন করে (Vide: Go. No. 26-3/75-NBR-247, Dated 25/6/1975 & F. 26-3/75-NBR/271 Dated 27/7/1977)  । তখন থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিয়মিতভাবে ঢাশিহা এর পরিচালনা বোর্ড গঠন করে আসছে। ঢাকা শিশু হাসপাতাল ৩১ ডিসেম্বর ১৯৭৭ সালে “Societies Registration Act XXI of 1860” অনুযায়ী রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত হয়।

 

২০২১ সালে জাতীয় সংসদ বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট আইন (২০২১ সনের ১৯ নং আইন) পাশ করে যা ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ এ কার্যকর হয়। তখন থেকে ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও বাংলাদেশ শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠান দুইটি একীভূত হয়ে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট নামে পরিচিতি লাভ করে, যা বাংলাদেশ সরকারের একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে ৬৮১ শয্যা বিশিষ্ট বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট উন্নত শিশু স্বাস্থ্য সেবায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।